
সিডনিতে টাইগারদের অসহায় আত্মসমর্পণ। ছবিঃ ইন্টারনেট
টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কখনোই ম্যাচ জিতেনি বাংলাদেশ। কাঙ্খিত সেই জয়ের লক্ষ্যেই আজ সিডনি ক্রিকেটে গ্রাউন্ডে নেমেছিলো বাংলাদেশ।
শুরুটা ভালোই হয়ে টাইগারদের। প্রথম ওভারেই অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে কট বিহাইন্ড করে ফেরান তাসকিন আহমেদ।
প্রথম ওভারেই উইকেট হারানোর ধাক্কা সামালে দলকে দারুণভাবে এগিয়ে নেন রাইলি রুশো ও কুইন্টন ডি কক। সিডনিতে দুইজনেই ব্যাটহাতে রিতিমত ঝড় তোলেন। ডি কক ফিফটি করে থামলেও রুশো তুলে নেন সেঞ্চুরি। তাতে বাংলাদেশকে ২০৫ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
বাংলাদেশের বিপক্ষে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার দুইশ ২০০ এর বেশি রান গড়ল দলটি। এর আগে ২০১৭ সালে ৪ উইকেটে ২২৪ রান করেছিল তারা।
টানা দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে রুশো খেলেন ক্যারিয়ার সেরা ১০৯ রানের ইনিংস। তার ৫৬ বলের ইনিংসটি গড়া ৮ ছক্কা ও ৭ চারে। ৩ ছক্কা ও ৭ চারে ৩৮ বলে ৬৩ রান করেন ডি কক। দুইজনে গড়েন ১৬৮ রানে জুটি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যেকোনো উইকেটে যা রেকর্ড। এর আগের রেকর্ডটি ছিলো শ্রীলঙ্কার মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারার। ২০১০ আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতেই তারা করেছিলেন ১৬৬ রান।
ইনিংসের প্রথম ওভারেই টেম্বা বাভুমাকে কট বিহাইন্ড করে দেন তাসকিন আহমেদ। কিন্তু এরপর ছন্দ হারিয়ে ফেলেন তিনি। ৩ ওভার করে দেন ৪৬ রান।
উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে স্রেফ ২৫ রান দেন মুস্তাফিজুর রহমান। খুব একটা ভালো করতে পারেননি আর কেউই। হাসান মাহমুদ ১ উইকেট নেন ৩৬ রান খরচায়। সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেওয়া সাকিব আল হাসান ৩ ওভারে দেন ৩৩ রান।
রান তাড়ায় নেমে দারুণ শুরু পায় বাংলাদেশ। কাগিসো রাবাদার ফুললেংথের দুটি বল, সৌম্য সরকারের দুটি ফ্লিক, দুটি ছক্কা! দ্বিতীয় বলে চার মেরেছিলেন নাজমুল হোসেন। প্রথম ওভারেই উঠেছে ১৭ রান।
সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিলো, কিন্তু তৃতীয় ওভারে নার্কিয়ার বলে কট বিহাইন্ডে হয় সাজঘরে ফেরে সৌম্য। ৬ বলে ১৫ করে সৌম্য ফেরার সময় বাংলাদেশের রান ২৬, ১ উইকেটে। এরপর শুরু হয় নার্কিয়ার গতি আতংক। যেন প্রোটিয়া বোলারের ১৪৭ কিলোমিটার গতির বলের জবাব দিতে পারছেন না টাইগার ব্যাটাররা। একে একে ফিরে যান শান্ত ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। নিজের প্রথম ১০ বল থেকেই ৩ উইকেট তুলেন নেন নার্কিয়া।
একইভাবে গতির আতঙ্ক বজায় রাখেন রাবাদারও, সেই সঙ্গে রয়েছে তার বাউন্স। সেই বাউন্সার তুলে মারার চেষ্টা করে মিড অনে নার্কিয়ার হাতে ক্যাচ তুলে দেন আফিফ হোসেন। ফলে ৪৭ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। পাওয়ারপ্লে শেষে টাইগারদের স্কোর ৪৭ রানে ৪ উইকেট।
এরপর থেকে আসা-যাওয়ার মধ্যেই ছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ছক্কা মারতে গিয়ে সাজঘরে ফিরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। একই হাল হয় মোসাদ্দেক, সোহানেরও।
একপাশে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের আসা-যাওয়া দেখছিলেন লিটন কুমার দাস। কিন্তু অনেকটা সময় টিকে থেকেও তেমন কিছু করতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত ফিরলেন তিনিও। এরপর একে একে হাসান মাহমুদ রান আউট হন এবং তাসকিন হন বোল্ড।
শেষ পর্যন্ত ১০৪ রানের লজ্জাজনক হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় টাইগারদের। সেই সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় অধরাই রয়ে গেল বাংলাদেশের।
