
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার অনেকদিন হয়ে গেলেও পাকিস্তান সুপার লিগের এবারের মৌসুম খেলেই অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন পাকিস্তান দলের এক সময়ের তারকা ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি। তবে সেই শেষ আসরেই অনাকাঙ্ক্ষিত এক হতাশার রেকর্ড করলেন পাকিস্তানের হয়ে এক সময়ের ত্রাস জনপ্রিয় এই অলরাউন্ডার।
রক্ত মাংসের এই মানুষটিকে দেখলেই এখনো আগের সেই আফ্রিদি মনে হলেও দেখতে দেখতে তার বয়স এখন ৪৬। পরপর দুইবার করোনায় আক্রান্ত হন তিনি। আর মহামারী এই রোগের কারনেই পিএসএলের প্রথমদিকের বেশ কিছু ম্যাচ খেলতে পারেন নি শহীদ আফ্রিদি।
৩ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের বিপক্ষে কোয়েট্টা গ্ল্যাডিয়েটর্সের হয়ে মাঠে ফেরেন এই অলরাউন্ডার। আর সেই ম্যাচেই আফ্রিদি গড়েছেন পিএসএলের সবথেকে খরুচে বোলিংয়ের এক তিক্ত রেকর্ড। দলে হার-জিত থাকেই, কিন্তু সব ছাড়িয়ে এই তিক্ত অভিজ্ঞতা পিছু ছাড়াতে পারবেন তো সাবেক এই অধিনায়ক?
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইসলামাবাদ ৪ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ২২৯ রান। কিন্তু এই ইনিংসে আফ্রিদি ৪ ওভার বল করে খরচ করেন ৬৭ রান। ৪ ওভারে খেয়েছেন ৮ টি ছয় এবং ১ টি চার। পেয়েছেন ১ টি উইকেট। এর মধ্যেই ক্যারিয়ারের অন্যতম একটি বদান্যতার রেকর্ড গড়েন এই অলরাউন্ডার।
আফ্রিদির এই খরুচে বল ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রান দেওয়ার রেকর্ড। পাকিস্তানের প্রিয় এই খেলোয়াড়ের এমন বোলিংয়ে পাকিস্তানের হয়ে ১টি করে টেস্ট ও ওয়ানডে খেলা বাঁহাতি স্পিনার জাফর গহরের কাঁধ থেকে নেমে গেলো দারুন একটি “বোঝা”। পিএসএলের গেলো আসরে পেশোয়ার জালমির বিপক্ষে ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের হয়ে ৬৫ রান দেওয়া জাফর গোহার ছিলেন পিএসএলের সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের মালিক।
জবাবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আফ্রিদির দল কোয়েট্টা অবশ্য লড়াই করেছে বেশ। প্রতিপক্ষ শিবিরে তৈরি করেছিলো ভয়। ১৯ ওভার ৩ বল খেলে অলআউট হওয়ার আগে দলটি সংগ্রহ করে ১৮৬ রান। গর্জন টা ভয় পাইয়ে দেওয়ার মত থাকলেও ছিলোনা যথেষ্ট। আর তাতে ৪৩ রানের দাপুটে জয় পায় ইসলামাবাদ। ব্যাট হাতেও মলিন ছিলেন আফ্রিদি। আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ৮ বলে করেছেন মাত্র ৪ রান।
শহীদ আফ্রিদি, পাকিস্তান ক্রিকেট ইতিহাসে একটি আবেগের নাম। পাকিস্তান সহ বিশ্ব ক্রিকেট অঙ্গনে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই খেলোয়াড়ের ভক্ত সংখ্যা অনেক। নিজের পেশাদারী এবং ব্যক্তিগত জীবন দিয়ে হয়েছেন অনেকের আইডল। ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষ দিকে এসে এমন তিক্ততায় হয়তো মনে দাগ কেটে যেতে পারে তার, কিন্তু ভক্ত কুল সেসব বিষয় মনে রাখতে চান না কোন মতেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাই আফ্রিদির পাশে দাঁড়াচ্ছেন বেশিরভাগ মানুষ।
