
নতুন তারকায় উদীয়মান আফগানিস্তান এখন অনেকটাই পরিপূর্ণ। গেলো কয়েকবছরে আফগানিস্তানের প্রাপ্তির তালিকায় যোগ হয়েছে অনেক কিছুই, সাথে দলটি পেয়েছে কিছু অপ্রতিরোধ্য, বিধ্বংসী খেলোয়াড়, যাতে নড়ে উঠতে পারে যেকোন প্রতিপক্ষ শিবিরের শক্ত ভীত।
সীমিত ওভারের সিরিজ খেলতে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সফরে আসার কথা ছিলো আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের। কিন্তু সফরকারী এই দলের হর্তাকর্তাদের মাথায় হয়তো ঘুরছে বাংলাদেশ কে বধ করার রণকৌশল। আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে দলটি বাংলাদেশের কন্ডিশনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে একটু আগেভাগেই ঢাকার মাটিতে পা রাখতে চাচ্ছে। কারন, ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের কঠিন উইকেটে অনেক বড় বড় দলেরও যে ঘামছাড়া অবস্থা তৈরি হয়ে গিয়েছে, তা আর অজানা নয় আফগানিস্তানের কাছে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে এবং দুইটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে আগামী ১২ই ফেব্রুয়ারী ঢাকার মাটিতে পা রাখতে যাচ্ছে আফগানিস্তান। আর কন্ডিশনের সাথে খাপ খাইয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে রণক্ষেত্রে নামতে সিরিজ শুরুর আগেই নিজেদের ঝালিয়ে নিতে সিলেটে এক সপ্তাহের ক্যাম্প করবে আফগানিস্তান।
বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ অনুষ্ঠিত হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। আগামী ২৩, ২৫ ও ২৮ ফেব্রুয়ারী ৫০ ওভারের খেলায় চট্টগ্রামে পরস্পরের মুখোমুখি হবে দল দুটো।
আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যকার তিন ম্যাচের এই ওয়ানডে সিরিজটি আইসিসির ওয়ানডে সুপার লিগের অংশ। আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ আটে থাকা দলগুলোই সরাসরি খেলতে পারবে ২০২৩ বিশ্বকাপ। আর এ কারনেই দুই দলের জন্যেই অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ এই সিরিজ।
চট্টগ্রামের মাঠে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলার পরপরই খেলোয়াড়রা ফিরবেন ঢাকার মাটিতে। হোম অব ক্রিকেটে ৩ ও ৫ মার্চ মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দুইটি টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান। ইতিমধ্যেই বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের সাদা বলের এই সিরিজের চূড়ান্ত সূচি ঘোষণা করেছে বিসিবি।
এর আগে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলো আফগানিস্তান। চট্টগ্রামের মাটিতেই একমাত্র টেস্টে বধ করেছিলো স্বাগতিক বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ২২৪ রানের এক অনবদ্য জয় পায় আফগানিস্তান। সেই সাথে সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকেই টেস্ট জয়ের রেকর্ড গড়েছিলো আফগানিস্তানের ২০ বছর বয়সী রশিদ খান। টেস্ট ক্রিকেটের নবীনতম এই দলের সাথে বাংলাদেশের হারের পর হয়েছিলো যথেষ্ট সমালোচনা।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেদিনের সেই টেস্ট ম্যাচ হারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নাম লিখিয়েছিলো এক ভিন্ন তিক্ততার রেকর্ডে। আর সেটি হলো, বিশ্ব ক্রিকেটের প্রথম দল হিসেবে টেস্টে ভিন্ন দশটি দেশের কাছে প্রথম দেখাতেই হারে বাংলাদেশ।
২০০০ সালের ২৬ শে জুন আইসিসির দশম দেশ হিসেবে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া বাংলাদেশের কাছে এমনটা প্রত্যাশা ছিলোনা কারোরই।
২০১৯ সালে চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে স্পিন সহায়ক উইকেটে খেলার ভুল থেকে অবশ্য শিক্ষা নিয়েছে বাংলাদেশ। আর তাই বাংলাদেশ দলের রয়েছে প্রানবন্ত খেলা উপহারের চিন্তাভাবনা। আর সেই চিন্তাতেই মিরপুরের উইকেট বিবেচনা করে ওয়ানডে সিরিজ চলে গিয়েছে চট্টগ্রামের মাঠে। বাংলাদেশের সমর্থকরাও তাই দলের কাছে আশা করছেন ভালো কিছুই।
আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে অবশ্য ভালো অবস্থানে আছে দুই দলই। ১২ ম্যাচে ৮ জয় নিয়ে বাংলাদেশ আছে পয়েন্ট তালিকার দুই নাম্বারে, অন্যদিকে ৬ ম্যাচে ৬ জয় নিয়ে আফগানিস্তান অবস্থান করছে তালিকার পাঁচ নাম্বার পজিশনে।
বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজের সূচি-
২৩ ফেব্রুয়ারি-প্রথম ওয়ানডে (জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম)
২৫ ফেব্রুয়ারি-দ্বিতীয় ওয়ানডে (জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম)
২৮ ফেব্রুয়ারি-তৃতীয় ওয়ানডে (জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম)
৩ মার্চ-প্রথম টি-টোয়েন্টি (মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম, ঢাকা)
৫ মার্চ-দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি (মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম, ঢাকা)
