
প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছিলো বাংলাদেশ। আজ নেমেছিলো আফগানিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশ করার লক্ষ্যে। কিন্তু তা আর হলো কোথায়৷ বাংলাদেশের বিবর্ণ ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ে হেসে খেলেই ৭ উইকেটের বড় ব্যাবধানে জিতলো আফগানিস্তান।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জেতাটা গুরুত্বপূর্ণও ছিলো বটে। তাদের সাথে এই ম্যাচটা জিততে পারলে বিশ্বকাপ সুপার লিগে আরো যোগ হতো ১০ পয়েন্ট। পাশাপাশি আইসিসি ওয়ানডে র্যাংকিংয়েও পাকিস্তানকে ছাপিয়ে ছয়ে উঠে যেতো বাংলাদেশ। কিন্তু হলো না কিছুই।
স্বাগতিক বাংলাদেশের করা ১৯২ রানের সংগ্রহটা ৫৯ বল হাতে রেখেই জিতে যায় আফগানিস্তান। বাংলাদেশের ফিল্ডিং ব্যর্থতাহ তিন ক্যাচ মিসে নিজের সেঞ্চুরিটা পূর্ণ করেন ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। তবে শুরুর দিকটা খারাপ ছিলোনা বাংলাদেশ দলের। তামিম ইকবালের বিদায়ের পর লিটন কুমার দাস এবং সাকিব আল হাসানের জুটিতে বড় সংগ্রহের আভাস পেয়েছিলো বাংলাদেশ। আর তারপরেই নামে ধ্বস। আর তাতেই বিনষ্ট হয় বড় সংগ্রহের আশা।
চট্টগ্রামে ২ উইকেটে ১২১ রান করে ফেলেছিলো টাইগাররা। কিন্তু তারপরের ৭১ রানেই বাংলাদেশ হারিয়েছে শেষের ৮ উইকেট। ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেও চাপটা বাড়ে বাংলাদেশ দলের বোলারদের উপর। কিন্তু তারাও সে জায়গায় ব্যর্থ।
তামিমের বিদায়ের পর সাকিব এবং লিটনের জুটিতেই ২১ ওভারে বাংলাদেশ পায় ১০০ রান। এর মাঝে ৫০ তম ম্যাচ খেলতে নামা লিটন তুলে নেন অর্ধশতক। পাশাপাশি তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে প্রথম ৫০ ম্যাচের মধ্যে ১৫০০ রান অর্জন করা মাইলফলক অর্জন করেন লিটন।
সেঞ্চুরির পথে থাকা লিটনকে অবশ্য সঙ্গ দিতে থাকা সাকিব আউট হন ৩০ রান করে। সাকিব চলে যাওয়ার পর আর কেউই সঙ্গ দিতে পারেন নি লিটনকে। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। সবশেষ লড়াই করতে থাকা লিটন বিদায় নেন ৩৬ তম ওভারে। সাজঘরে ফেরার আগে ১১৩ বল মোকাবিলায় করেন ৮৬ রান, মেরেছেন ৭ টি চার।
তারপরের দায়িত্বটা নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে বোলারদের সাথে নিয়ে ব্যাটেও খুব ভালো কিছু করতে পারেন নি মাহমুদউল্লাহ। ৫৩ বলে ২৯ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। সবশেষ ৪৬.৫ ওভারেই মাত্র ১৯২ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
আফগানিস্তানের হয়ে রশিদ খান নেন সর্বোচ্চ ৩ টি উইকেট এবং মোহাম্মদ নবী নেন ২ টি উইকেট।
বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ১৯২ রান তাড়া করতে নেমে ওপেনিংয়েই দারুন সূচনা পায় আফগানিস্তান। রিয়াজ হাসানকে সঙ্গে নিয়ে ৭৯ রান যোগ করেন ব্যাটার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। তবে ৪৯ বলে ৩৫ রান করে বিদায় নেন রিয়াজ।
এরপর দ্বিতীয় জুটিতেই ম্যাচ বাংলাদেশের হাত থেকে ফসকে যায় পুরোপুরি। রহমত শাহ ও গুরবাজ দুজনের জুটি থেকে আসে ১০০ রান।
বাংলাদেশ দলের যে পরিমান ফিল্ডিং ব্যর্থতা দেখা যাচ্ছিলো, তাতে মনে হচ্ছিলো এই জুটিতেই জিতে যাবে আফগানিস্তান। তিন রানের মধ্যে ফিল্ডিং ব্যর্থতায় তিনবারই সুযোগ পেয়েই ছক্কা হাঁকান গুরবাজ। তবে ৩৬ তম ওভারে এসে মিরাজের করা বলা বলে ভাঙ্গে এই জুটি। ৪৭ রান করে ফিরতে হয় রহমতকে। পরের ওভারে বিদায় নিতে হয় অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদিকে (২)।
সবশেষে অপরাজিত ১১০ বলে ৭ চার ও ৪ ছয়ে ১০৬ রান করে দলকে জেতান গুরবাজ। বিশ্বের পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে নিজের প্রথম তিন ফিফটিকেই সেঞ্চুরিতে রূপ দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ পান সর্বোচ্চ ২ টি উইকেট।
